শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫১ অপরাহ্ন

সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য

সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে ২৬টি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন ও ফাংশনাল সার্ভিসের সংগঠন বিসিএস সমন্বয় কমিটি।

তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি সংশ্লিষ্টরা। বরং উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির ব্যবস্থা চালু করে তাদেরকে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় সুদমুক্ত ঋণ প্রদান ও গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে আর্থিক সহায়তা দিয়ে বৈষম্য আরও বাড়ানো হয়েছে।

এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি বলেছেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে সব কাজ করানো যায়। ফলে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা একটু বেশি পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ‘বিসিএস সমন্বয় কমিটি’র সদস্যদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা। তারা শিগগির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রতিকার চাইবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বেতন-বৈষম্য দূরীকরণ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির একটি বৈঠক গত ১৯ জুন সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় কর্মরত কিছু পদে বেতন-বৈষম্য নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল উন্নীত করার বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়। এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের সময় বাড়ানোর একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও তা নাকচ হয়ে যায়।

বৈঠক শেষে এক সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা বেশি সুবিধা পান। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেক দিন ধরে ক্ষোভ রয়েছে।

এর জবাবে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, এটা তো হতেই পারে। কারণ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে সব কাজ (অল পারপাস) করানো যায়। তাদের ‘কোয়ালিটি ভেরি ডিফরেন্ট’। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত দশ বছরে পদোন্নতি নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

তার দাবি, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতেই পদোন্নতি দেয়া হয়। অবশ্য অর্থমন্ত্রী এ কথাও বলেছেন, প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে অন্যান্য ক্যাডারেও মানসম্মত অনেক কর্মকর্তা আছেন। উদাহরণ দিয়ে মুহিত বলেন, বর্তমান অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরী অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে চাকরি শুরু করেন।

ওই ক্যাডার ছেড়ে উপসচিব হয়ে আসেন। পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি পেয়ে এখন তিনি সচিব। এ নিয়ে জনপ্রশাসনে কোনো ধরনের ক্ষোভ বা অসন্তোষ নেই।

অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ২৬টি ক্যাডারের নেতারা। নাম প্রকাশ না করে যুগান্তরের কাছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সমন্বয় কমিটির একাধিক নেতা ও সদস্য। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি একাধিক সচিব সভায়ও বিষয়টির সুরাহা করতে বলেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই যাচ্ছেন। বৈষম্য দূর করার কোনো উদ্যোগ নেননি তারা। এতে দিন দিন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য বাড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিএস সমন্বয় কমিটির একজন নেতা যুগান্তরকে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধার জন্য অনুমোদিত পদের বাইরেও পদ সৃষ্টি করে (সুপারনিউমারারি) তাদের পদোন্নতি ঠিকই করে নিচ্ছেন। অথচ অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কোনো কোনো ক্ষেত্রে পদ খালি থাকা সত্ত্বেও তাদের পদোন্নতি দেয়া হয় না, বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু কিছু বিশেষায়িত ক্যাডারের শীর্ষ পদের (অধিদফতর বা সংস্থা প্রধান) জন্য সংশ্লিষ্ট ক্যাডারে উপযুক্ত কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও সেখানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হচ্ছে। ফলে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য বেড়েই চলেছে।





© All rights reserved © 2017 alltimenewsbd24.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com