বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ অপরাহ্ন

তৈরি পোশাক ওষুধসহ ৩৬ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দাবি

তৈরি পোশাক ওষুধসহ ৩৬ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দাবি

দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড। এছাড়া বাংলাদেশে অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল, পর্যটন, ম্যানুফ্যাকচারিংসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহের কথাও জানিয়েছে থাই বিনিয়োগকারীরা। জবাবে বাংলাদেশ আশ্বস্ত করেছে, থাই বিনিয়োগকারীরা এ দেশে বিনিয়োগ করলে তাদের জন্য সরকার ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনের মধ্য থেকে তাদের পছন্দমতো যে কোনো একটি ছেড়ে দেয়া হবে। তবে এফটিএ সই ও কার্যকরের আগে থাইল্যান্ডে রফতানি হওয়া তৈরি পোশাক, ওসুধসহ ৩৬ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ঢাকা সফররত থাইল্যান্ডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস বিষয়কমন্ত্রী কোসবেক পুট্রাকুল’র নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের থাই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এসব বিষয় উঠে আসে।

দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের ১০০টি প্রকল্পে প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে থাইল্যান্ড বিনিয়োগ করলে একটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন বরাদ্দ দেয়া হবে।

এজন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প নগরীতে তারা বিনিয়োগ করলে রফতানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত নগদ আর্থিক সহায়তার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে এফটিএ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে থাইল্যান্ড বাংলাদেশকে ৬,৯৯৮টি পণ্য রফতানি ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে ৪৮ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে।

একই সময়ে আমদানি করেছে ৭৮১ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধসহ যে সব পণ্য থাইল্যান্ডে প্রচুর চাহিদা রয়েছে এমন আরও ৩৬টি পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে।

থাইল্যান্ডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস বিষয়কমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। বিনিয়োগের বিষয়ে বিডার সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যটন, ফাইন্যান্স, ম্যানুফেকচারার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাণিজ্য করার সুযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীস বসু, বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বেনোয়েট প্রিফনটেইন, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম, থাইল্যান্ডের ডেলিগেশন সদস্য ছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য সংলাপ : থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ

সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের অবকাঠামো, জ্বালানি, স্যানিটারি, কৃষিসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন থাই ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সংলাপে থাই ব্যবসায়ীদের প্রতি এই আহ্বান জানান সংগঠনটির সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

এফবিসিসিআই’র প্রথম সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সংস্কার ও বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী কোবসাক পুত্রাকুল, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দা মুনা তাসনিম, বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত প্যানপিমন সুয়ান্নাপংসে প্রমুখ।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, থাইল্যান্ড বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখনও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তি ও জ্ঞান হস্তান্তর প্রয়োজন।

থাইল্যান্ড এদিক থেকে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট (জনশক্তির বোনাস) কাজে লাগিয়ে কৃষি, টেক্সটাইল, সিরামিক, চামড়া খাতে বিনিয়োগ করতে পারে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা। কারণ এখনই বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। প্রয়োজনে যৌথ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হবে।

থাইমন্ত্রী কোবসাক পুত্রাকুলও সে দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে ৬.৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে।

এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২ দশকে মাথাপিছু আয় ৬ হাজার ডলারে উন্নীত হবে। এ উন্নয়নকে থাই ব্যবসায়ীরা অগ্রাহ্য করতে পারে না। পাশাপাশি বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের বিশাল বাজার রয়েছে।





© All rights reserved © 2017 alltimenewsbd24.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com